নাজিরপুরে ৫ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের দূরর্ভোগ Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৩ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




নাজিরপুরে ৫ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের দূরর্ভোগ

নাজিরপুরে ৫ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের দূরর্ভোগ




সুমন খান বিশেষ প্রতিনিধি:পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও পাশ্ববর্তী শাখালীকাঠী ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাতকাছিমা নদীর ওপর একটি ব্রীজ না থাকায় ওই দুই ইউনিয়নের ৫ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিজেদের উদ্যোগে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করে বিগত তিন যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ পারাপার হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

এ সাঁকো দিয়ে ওই গ্রাম গুলোর সাধারণ মানুষ ও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নানা কষ্টে পারাপার হয়ে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ উপজেলায় চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং এমপিসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতনদের পদচারণা থাকলেও বছরের পর বছর এখানকার সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগ যেন দেখার কেউই নেই।

স্থানীয়রা জানায়, গত প্রায় ৩৫ বছর আগে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগ ও নিজ খরচে তৈরি করেছেন এ সাঁকোটি। দু’পাশে সড়ক থাকায় পূর্বে এ নদী পারাপার হতেন নৌকা দিয়ে।এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাজিরপুর উপজেলার অনেক ইউনিয়নে এই সরকারের উন্নয়নের কাজ চললেও তাঁদের ইউনিয়নে প্রয়োজনীয় রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট নির্মিত হয়নি। দীর্ঘদিন যাবত কারো কোন নজর না থাকায় ওই গ্রাম গুলোর মানুষকে নদীর পারাপারের গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগেই সাকোঁ তৈরি করেছে। এখানে বাঁশের এই সাঁকো দিয়ে উপজেলার বাইনকাঠী, তারাবুনিয়া, ঘোপেরখাল, উত্তর শাখারীকাঠী, ছিটকিবুনিয়া ও গিলাতলা গ্রামের বাসিন্দারা এ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে। কিন্তু একটি ব্রিজ না থাকায় যাতায়াতসহ মালামাল আনা-নেয়ায় তাদের দারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া ওই গ্রাম গুলোর মানুষ নাজিরপুর উপজেলায় অফিসিয়াল কাজকর্ম করার জন্য এই বাঁশের সাঁকো পার হয়ে মোটরসাইকেল যোগে যাতায়াত করেন।

এছাড়া ওই বাঁশের সাঁকোর দুই প্রান্তে উত্তর শাখারীকাঠী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় সাথেই রয়েছে পরশমনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ঘোপেরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অপর প্রান্তে পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তারাবুনিয়া সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয়ের ছোট ছোট প্রায় কয়েকশ’ শিক্ষার্থী প্রতিদিন দুই বেলা এ সাঁকো পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। অনেক সময় এসব শিক্ষার্থীরা সাঁকো থেকে নদিতে পড়ে গিয়ে খাবার ও বইপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া এই নদি পার হয়ে শিক্ষার্থীরা উপজেলা সদরের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয় ও নাজিরপুর কলেজে লেখাপড়া করে।দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ পথচারীরা নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। কেউ কেউ সাকোঁ থেকে পড়ে অকালে প্রাণ হারানোসহ নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ভারি মালামাল বহনের সময় পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। দেখা গেছে, নদীর দু’পাশের সড়কের অবস্থা ভালো থাকলেও এখন পর্যন্ত এ স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে মেম্বার, চেয়ারম্যান এমনকি সংসদ সদস্যরাও নির্বাচনের আগে সেতু নির্মাণের কথা বললেও পরে তা আর নির্মিত হয়নি। ৭০ ফুট দীর্ঘ এই সাঁকোটিও যেকোনও সময় ভেঙে যেতে পারে। তাই দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।এ ব্যাপারে নদীর তীরবর্তী পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উথান মন্ডল জানান, এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে এলাকার মানুষ ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর যাতায়তসহ কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। ব্রিজ না থাকায় এই ইউনিয়ন দুটি চরম অবহেলিত। বর্ষাকালে সাধারণ মানুষসহ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তাই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চান তারা।

৫নং শাখালীকাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান গাউস বলেন, দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছর পরেও সাতকাছিমা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সভায় বিষয়টি বারবার উত্থাপন করার পরও এর কোনও সমাধান হয়নি বলে ক্ষোভ তার।

পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার বৈরাগী জানান, বেশির ভাগ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাঁকো থেকে নদিতে পড়ে গিয়ে প্রায়ই বই, খাতা নষ্ট হয়। স্যান্ডেল হারিয়ে যায়। মাঝে মাঝে সাঁকো ভেঙে গেলে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয়। তরাবুনিয়া গ্রামের কৃষক অনু বৈরাগী বলেন, নদিতে ব্রিজ না থাকায় কৃষকেরা কৃষিপণ্য মাথায় করে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়।

নাজিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারেফ হোসেন খান জানান, জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ছাড়া উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, এলজিইডি অফিস থেকে প্রধান কর্মকর্তার সাথে আমার কথা হয়েছে ওই সাঁকো ব্রিজ করার জন্য কয়েক বার মেপে এসেছেন।বরাদ্দ পেলে অবশ্যই সাঁকোটি ব্রিজে পরিণত হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD